Khudiram bose biography pdf free download


ভূমিকা

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মবলিদানের গৌরব গাঁথা রচনা করা এক সর্বকনিষ্ঠ অমর বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু ভারত থেকে ব্রিটিশ শাসন উৎখাত করার জন্য সশস্ত্র বিপ্লবে অংশ নিয়ে দেশের জন্য নিজের প্রাণ ত্যাগ করতে পিছপা না হওয়া এক তরুন। যিনি ছিলেন মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে জীবনের জয়গান গাওয়া এক অসম সাহসী প্রতিবাদী যুবক, তিনিই প্রথম বাঙালী বিপ্লবী যাকে ব্রিটিশ সরকার ফাঁসি দিয়েছিল, কিশোর বিপ্লবী ক্ষুদিরামের ফাঁসি ভারতীয় জনমানসে স্বাধীনতা আন্দোলনের পথে একটি নতুন যুগের সূচনা করে।

জন্মপরিচয়

তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত মেদিনীপুর জেলা শহরের কাছাকাছি কেশপুর থানার অন্তর্গত মোহবনী গ্রামে ৩রা ডিসেম্বর ১৮৮৯ সালে ক্ষুদিরাম বসু জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ত্রৈলোক্যনাথ বসু ও মাতা লক্ষীপ্রিয় দেবীর চতুর্থ সন্তান ছিলেন তিনি।

 শিক্ষাজীবন

ক্ষুদিরাম বসুর শিক্ষাজীবন শুরু হয় তমলুকের হ্যামিলটন স্কুলে। ১৯০২ সালে ক্ষুদিরাম তার বোন অপরুপার স্বামী অমৃতর সাথে তমলুক শহর থেকে মেদিনীপুরে চলে আসেন। সেখানে মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন। এই স্কুলে পড়াকালীন ক্ষুদিরাম হেমচন্দ্র কানুনগো, জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসু, সত্যেন্দ্রনাথ বসুর বিপ্লবী ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হন। স্কুলের শেষ পরীক্ষায় পাস করে মেদিনীপুর কলেজে ভর্তি হলেও তিনি পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর কাছে রাজনৈতিক দীক্ষা নেন।

কর্মজীবন

বিপ্লবী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর চেষ্টায় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন খুব জোরালো হয়ে উঠেছিল। তিনি চেয়েছিলেন, অল্পবয়সী ছেলেদের নিয়ে একটি দল গড়ে তুলতে, তার এই দলে যোগ দেবার পর থেকেই ক্ষুদিরামের জীবনে ও ব্যক্তিত্বে বিশেষ পরিবর্তন দেখা দিল ক্ষুদিরাম হয়ে উঠলেন অন্য মানুষ। লাঠি খেলা শিখলেন, ব্যায়ামের দ্বারা শরীরকে আরো মজবুত করে তুললেন, তার সংকল্প ছিল গ্রামের সকল মানুষকে সত্যিকারের মানুষ করে তোলা। জনগণের সেবা করাই ছিল তার ব্রত। প্রাকৃতিক দুর্যোগেও মানুষের সাহায্যের জন্য তিনি বাড়ি বাড়ি ঘুরে অর্থের সংগ্রহ করতেন।

কাজী নজরুল ইসলাম সংক্ষিপ্ত জীবনী

বিপ্লবী জীবন

ক্ষুদিরাম বসু তার প্রাপ্তবয়সে পৌঁছোনোর অনেক আগেই একজন ডানপিটে, রোমাঞ্চপ্রিয় হিসাবে পরিচিত লাভ করেন। ১৯০২-০৩ যুগান্তর দলে সালে বিপ্লবী নেতা শ্রী অরবিন্দ ঘোষ এবং সিটার নিবেদিতা মেদিনীপুর এমণ করে এবং জনসম্মুখে বক্তব্য রাখেন এবং বিপ্লবী দলগুলির সাথে গোপন পরিকল্পনা করেন তখন ক্ষুদিরাম বিপ্লবে যোগ দিতে অনুপ্রানিত হন। এখানেই তাঁর বিপ্লবী জীবনের অভিষেক। ১৯০২ সালে তিনি নবগঠিত যোগদান করেন। অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই তিনি সবার চোখে গুরুত্বপূর্ণ সক্রিয় সদস্য হয়ে ওঠেন দলের, সেই সময় বিলাতি দ্রব্য বয়কট, বিলাতি লবনের নৌকা ডোবানো প্রভৃতি কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে স্বদেশী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি।

খ্যাতি

ক্ষুদিরাম বসু ছিলেন বাংলার একজন বিখ্যাত বিপ্লবী। কলকাতার চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড ছিলেন খুব অত্যাচারী। তিনি বাংলার বিপ্লবীদের ভয়ে মজফ্ফরপুরে যান। তাঁকে হত্য করার জন্য ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকি মজফ্ফরপুরে যান। তাঁরা ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ৩০ এপ্রিল রাতের অন্ধকারে কিংসফোর্ডকে হতা করার জন্য একটি গাড়িতে বোমা ছোঁড়েন। কিন্তু গাড়িতে কিংসফোর্ড ছিলেন না, গাড়িতে ছিলেন হাইকোর্টের ব্যারিস্টার কেনেডির স্ত্রী ও কন্যা। তাঁরা দুজনেই মারা যান। তারপর ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকি সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরের দিন ক্ষুদিরাম বসু ওয়াইনি স্টেশনে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। বিচারে তাঁর ফাঁসির আদেশ হয়।

মৃত্যু

১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ১১ আগস্ট মজফ্ফরপুরে ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি হয়।

উপসংহার

ক্ষুদিরামের জীবন সাহসী, ত্যাগ, সংবেদনশীলতা, স্বদেশপ্রেম, শান্ততা, বিদ্রোহ এবং যৌবনের প্রতীক, ক্ষুদিরামের মৃত্যু গোটা দেশবাসীর মনকে স্বাধীনতার জন্য আন্দোলিত করেছিল। দেশবাসীকে অন্তর থেকে জাগিয়ে দিয়েছিল সে কারণ নিজস্ব শক্তি, মর্যাদাবোধ এবং বীরত্ব সম্পর্কে অবজ্ঞাহীন কোন জাতির তন্ত্রাচ্ছন্ন অবস্থাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।

Download PDF : ক্ষুদিরাম বসুর আত্মজীবনী

FAQ:-

1. ক্ষুদিরামের মায়ের নাম কি?

ক্ষুদিরামের মায়ের নাম লক্ষীপ্রিয় দেবী।

2. ক্ষুদিরাম বসু কি বিবাহিত?

না ক্ষুদিরাম বসু বিবাহিত নয় যখন তাঁর ফাঁসি হয়েছিল তখন তাঁর বয়স ছিল ১৫ বছর।

3. ক্ষুদিরাম বসু কত সালে মারা যান?

১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ১১ আগস্ট মজফ্ফরপুরে ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি হয়।

আরও দেখুনঃ

সত্যজিৎ রায় জীবনী

এ পি জে আব্দুল কালাম প্রবন্ধ রচনা

Categories জীবনীTags Khudiram Bose Biography in Bengali, ক্ষুদিরাম বসু রচনা class 3, ক্ষুদিরাম বসু রচনা class 4, ক্ষুদিরাম বসু রচনা pdf, ক্ষুদিরাম বসুর আত্মজীবনী, ক্ষুদিরাম বসুর রচনা